April 24, 2024
বাংলায় বিজেপির দুটো চোখের মণি কংগ্রেস-সিপিএম : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসিত কুমার মালের সমর্থনে পূর্ব বর্ধমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনসভা | ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ
বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। মা মাটি মানুষের সঙ্গে রয়েছি। অনেকে বলে হেলিকপ্টারে চড়ে আসে। একবার হেলিকপ্টারে চড়ে আসুন, লু জ্বলে, এত তীব্র দহনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে সন্তুষ্ট করতে তিন মাস ধরে নির্বাচন করছে। ৭-৮ মের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যায় প্রতিবার। এমন কী হল, জুন পর্যন্ত টানতে হল।
অনেকে এসি ১৭-১৮ সেলসিয়াসে চালিয়ে দেন। দার্জিলিঙে থাকবেন বলে। আমি যে ঘরে থাকি এসি চালাই না। চালালেও ২৭ এর নীচে চালাই না। গবেষকরাই বলছেন, ২৫ এর নীচে এসি চালানো উচিত নয়। এইভাবে চালালে কিন্তু বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। ভাঁড়ার শেষ হয়ে যাবে। আমরা দেউচা পাঁচামি করছি। যাতে ঘাটতি না হয়। বাংলাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ১ লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হবে।
এটা আমার নির্বাচন নয়, দিল্লির নির্বাচন। সেখানে বিজেপিকে হারাতে হবে। তাই রোদে জ্বলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এক একটা সিট চোখের মনির মতো রক্ষা করতে হবে। বাংলায় বিজেপির দুটো চোখে, কংগ্রেস সিপিএম। যদি কিছু ভোট কাটা যায়। এটাই বিজেপির কামনা।
কেষ্টকে আপনারা কত ভালবাসতেন, কেসে কী আছে জানি না। একটা গরিব লোক যদি গিয়ে দাঁড়াত, কাউকে ফেরাত না। জেলা ছিল ওর হাতের মুঠোয়। আমি প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে দেখতাম, কীভাবে কাজ করত। প্রতি নির্বাচনে গৃহবন্দি করে রাখত।
আমাদের সাংসদরা মার খেয়েছেন. টানতে টানতে থানায় নিয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদরাই সংসদে বিজেপিকে জব্দ করে রেখেছে। সারা দেশে যত আঞ্চলিক দল রয়েছে, বিজেপিকে ভয় তৃণমূলই দেখায়। বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইটা বিজেপির হচ্ছে।
নানুরে যখন ১১ হত্যা করা হয়েছিল, আমি গিয়েছিলাম, দেখলাম ১১টা বডি, একটা নতুন সাদা কাপড় পর্যন্ত নেই। আমি বললাম, কিনে দিতে পারলে না, তখন ওরা বলেছিল, পয়সা নেই। তখন ভেবেছিলাম, শেষকৃত্য যেন সবার ভালভাবে হয়। ঝাড়গ্রাম দিয়ে যাচ্ছি, দিদি মেয়েরা শুধু সাইকেল পাবে, আমি ভাবলাম, ঠিকই তো, সাইকেল মেয়েরাও পাবে, ছেলেরাও পাবে। তাই সবাইকে সাইকেল। ১১ লক্ষ বাংলার বাড়ির লিস্ট কেন্দ্রের কাছে পড়ে রয়েছে। তারা সাড়ে তিনশো টিম পাঠিয়েও করে নি। একশো দিনের কাজের টাকা দেয়নি। কেন্দ্র বন্ধ করে দিলেও কর্মশ্রী চালু করেছি। জব কার্ড হোল্ডাররা গ্যারান্টির কাজ পাবেন। টাকাটা আমরাই দেব। ডিসেম্বর মাসে বাংলার বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা। আগামী ৬ মাসেই কাজ শুরু।
আগেরবার ৫৪৩-র মধ্যে ৩০৩ পেয়েছিল। এবার উত্তরপ্রদেশেও ভাল সিট পাবে না। অখিলেশরা ভাল লড়াই করছে। বিহারে হাফও পাবে না। রাজস্থানে প্রথম ভোটেই কুপোকাত, মধ্যপ্রদেশেও অর্ধেক সিট পাবে না।তামিলনাড়ুতে জিরো পাবে। কেরলে সিপিএম-কংগ্রেস মিলেমিশে পাবে, তেলেঙ্গনাতেও অর্ধেক পাবে না। বিজেপির প্রচুর টাকা, জনগণের টাকা মেরে নিজের প্রচার করছে।
আজকে বলে বেড়াচ্ছে, মাংস-মাছ-ডিম খাবেন না। উত্তরপ্রদেশে দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। প্রচারবাবু যা বলবে, তাই খেতে হবে। আমাদের এখানে বন্ধ করতে পারেনি। কারণ আমরা বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করে বাঁচি। কারণ আমরা মনে করি, সব মানুষ সব ধর্মের নিজেদের মতো বাঁচার অধিকার রয়েছে। বিজেপি এলে না থাকবে ধর্মের অধিকার, কথা বলার অধিকার।
২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আবার এক মাসের মধ্যে সুদ দিয়ে টাকা ফেরত দিতে হবে। বিজেপি নেতাদের বলি, এই সব কেস করে সরকারি কর্মীদের চাকরি খাচ্ছো, আপনাকে বললে পারবেন দিতে টাকা ফেরত? বাংলার কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? শিক্ষকের চাকরি কি আর হবে না? আমার হাতে ১০ লক্ষ চাকরি রয়েছে সরকারি দফতরে, আদালত আটকে দিচ্ছে। বিজেপি মামলা করলেই… যা বলবে তাই। আর অন্য কেউ বিচার চাইলে দরজা বন্ধ।
সবচেয়ে বড় গদ্দার, যাঁর বিরুদ্ধে মার্ডার কেস রয়েছে, তা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না, এটা কি আইন? আমিও আইনের ছাত্রী ছিলাম, এখনও বার কাউন্সিলের মেম্বার। আমি জাজেস নিয়ে কথা বলব না। কিন্তু জাজমেন্ট নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। যদি অন্যায় থাকে, পরামর্শ দিতে, তা না করে ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নিচ্ছো, এটা কী মজা?
এখন আর বেকার, মূল্যবৃদ্ধি, ওষুধের দাম নিয়ে কথা বলছে না। এখন শুধু বলছে NRC করব, CAA করব, মানে আপনার ধর্ম-অধিকার বিক্রি হয়ে যাবে। সম্পত্তি কেড়ে নেবে। আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে।
একটা ভাওতাবাজি পার্টি। যত চোর ডাকাত মাফিয়া বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। আমাদেরও বুকের পাটা রয়েছে। আমাদেরও রোজ ১০টা করে চিঠি পাঠাচ্ছে। বিজেপির কেউ গ্রেফতার হয়েছে? কেষ্ট যদি দুর্নীতির জন্য গ্রেফতার হয়, গদ্দার তো সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ. ও কেন গ্রেফতার হবে না। বড় বড় কথা বলে, বলে বোমা ফাটাবে। ২৬ হাজার চাকরি কেড়ে ঢাক বাজাচ্ছে।
টিভি, ইউটিউবতে, সোশ্যাল মিডিয়াতে যা দেখছেন, তা বানানো। কোটি কোটি টাকা খরচ করে দাঙ্গা লাগায়, আইটি কোম্পানিগুলোতেও প্রচুর কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। বাংলায় যত বেশি সিট পাব, তত ইন্ডিয়া জোটকে শক্তিশালী করতে পারব।
দূরদর্শনের দেখবেন, রঙটাও গেরুয়া করে দিয়েছে। কেবল মোদী কা বাত বলবে, দেখবেনই না, বয়কট করে দিন। বিজেপি তো ভোগী, ওরা কেন গেরুয়া পরবে?