জুন ১৪, ২০১৯
বাংলায় গুন্ডাদের স্থান নেই: বীজপুরে মুখ্যমন্ত্রী

আজ বীজপুরে এক কর্মীসভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা বাংলা জুড়ে বিজেপির ছড়ানো ভোট পরবর্তী হিংসা ও খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। সকলকে তিনি শান্তিপূর্ণ ভাবে একজোট হয়ে তিনি বিজেপির এই হিংসার রাজনীতির মোকাবিলা করতে আহ্বান জানান।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে শুরু হয়েছে সন্ত্রাসী, উগ্রবাদী, মৌলবাদী উগ্রপন্থা অর্ধশক্তি, গর্ধশক্তির চিতা জ্বালানোর সন্ত্রাস। আর তা মোকাবিলা করার জন্য শান্তির আহ্বানে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর দিন থেকেই আমাদের কাজ শুরু হয়েছে
গুজরাতে দাঙ্গা হয়েছিল তাই আমরা বাংলাকে গুজরাত বানাতে দেব না। আমি সব ভাষাকে সম্মান করি, সব রাজ্যের মানুষকে ভালোবাসি
বাংলায় থেকে গুণ্ডামি করে বাঙ্গালীদের ভয় দেখালে তা বরদাস্ত করা হবে না, এই ক্রিমিনালগিরি বাংলায় সহ্য করব না
নির্বাচনে কয়েকটা সিট জিতে বড় বাঘ হয়ে গেছে। ইভিএম মেশিনটা পরীক্ষা করে দেখা হোক, নির্বাচনের কেন এত হিন্দু মুসলমান করেছেন? নির্বাচনের ২৭০০০ কোটি টাকা কোথা থেকে এল?
সিপিএমে হাতেখড়ি, তৃণমূলে গড়াগড়ি তারপর বিজেপিতে গিয়ে সুড়সুড়ি আর শেষে কেটে পরি। কেউ কেউ কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছে। আমিও কংগ্রেস করতাম। কিন্তু ওরা যখন সিপিএমের কাছে নিজেদের আদর্শ বিকিয়ে দেয় তখন আমরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল তৈরি করেছি
আজ এই সিপিএম আজ বিজেপি হয়েছে, সিপিএমের ভোট কি করে বিজেপিতে গেল? কারণ সিপিএম নিজেদের সাইনবোর্ড নিজেরাই তুলে নিয়েছে।
মনে রাখবেন সব সাইনবোর্ড টাকা দিয়ে কেনা গেলেও তৃণমূল কংগ্রেসের সাইনবোর্ড খুব পোক্ত, একে টলানো যাবে না।
আমি বিশ্বাস করি এবারও মেশিনে প্রোগ্রামিং করা হয়েছিল। তা না হলে জিততে পারতো না। অনেক মেশিন ব্যবহৃত হয়েছে যাতে মক পোল করা হয়নি। নির্বাচনের দিন অনেক মেশিন খারাপ হয়ে গেছে, মানুষ যখন লাইনে দাঁড়িয়েছিল তখন হথাৎ একটা মেশিন আনা হয়েছে তাতে প্রোগ্রামিং করা ছিল কিনা কেউ দেখেছিলেন?
আমরা ইভিএম চাই না, ব্যালট চাই। আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এটাই আমাদের ২১ শে জুলাইয়ের আন্দোলন
সংবাদমাধ্যম তো একটা ব্যবসা। কোথাও ভালো সংবাদ কোথাও ভেজাল সংবাদ আছে। যারা ফেসবুক করে তাদের আমি শ্রদ্ধা করি, কিন্তু যারা ফেকবুক করে,বিজেপি ৯৯% টাকা দিয়ে ফেকবুক করে। ওদের কাছে এখন এত টাকা হয়েছে যে টাকা এখন ওদের কাছে মুল্যহীন, ২ নম্বর খাতার পাতার কাগজের চেয়েও মূল্যহীন।
টাকা ছড়িয়ে দেশটাকে সর্বনাশ করে দিয়েছে এবং দলবাজি করছে, আর বিদ্বেষমূলক ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করছে। রাজবংশীদের বুঝিয়েছে বাঙালীরা থাকলে তোমরা থাকবে না। তাই, তোমরা বাঙালীদের বিরুদ্ধে ভোট দাও, তাহলে জমি দাও। গোর্খাদের বলেছে আমরা গোর্খাল্যান্ড আলাদা করে দেব। মহারাষ্ট্র, গুজরাট থেকে বিহারীদের তাড়িয়েছে। বাংলায় এসব করা হয় না। ওদের এই খেলা বন্ধ করতে হবে।
হিন্দু মুসলমান, শিখ-খৃস্টান, তপশিলিদের মধ্যে উচ্চ আর নিম্ন করেছে। বাংলাদেশ থেকে আগতদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে খেপাচ্ছে।
যারা নেতাদের থেকে টাকা নিয়ে দাদাগিরি করছে, তাদের বলব, শান্তিতে সংসার করুন। তৃণমূল যখন তৈরী হয়েছিল, ভয় পেতাম ক্ষতির। আজ দল বিশাল, আর পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সাত দিন সময় দিলাম, যার যার যাওয়ার চলে যাক।
মা বোনেরা, জয় হিন্দ বাহিনী এগিয়ে আসুন। আমি কাউকে ভয় পাইনা, আমার জন্ম আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। আমায় আঘাত করলে, আমায় আটকানোর ক্ষমতা নেই। আমি মৃত্যুকে ভয় পাইনা, মৃত্যু আমায় ভয় পায়।
আমি বেশী মানবিকতা দেখিয়েছিলাম, সেটাই আমার দোষ। আমরা জেতার পর কাউকে গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। এখন থেকে আপনাদের চাবুকের মত লড়াই করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা দুর্বল নয়। আপনারা শান্ত থেকে এখানে শান্তি ফিরিয়ে আনুন।
উত্তর প্রদেশে ভোটের পর ৫০ জন খুন হয়েছে, ৮৫০ জনকে এনকাউন্টারে মারা হয়েছে, বাংলাতেও আমাদের ৯ জনকে খুন করা হয়েছে। বাংলায় চার হাজার বাঙালীর ঘর বাড়ি ভাঙা হয়েছে, তারা ঘরছাড়া। আমি চাই সবাই শান্তিতে থাকুন।
মৃতদের পরিবারকে দলমত না দেখে ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। যারা চাকরির আবেদন করেছে, তাদের করে দিয়েছি। আমি বিপদে আপদে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়াই।
বাংলায় গুণ্ডাদের স্থান নেই। তৃণমূলের পতাকা কাঁধে নিয়ে জয় হিন্দ বন্দে মাতরম জয় বাংলা বলে গর্বের সাথে এগিয়ে চলুন।