March 29, 2021
নন্দীগ্রামের সংগ্রামকে শ্রদ্ধা করে এখানে দাঁড়িয়েছি: নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ:
আজ ভেবেছিলাম রাজনৈতিক বক্তব্য রাখব না। দোল উৎসব আজ।ধর্ম যার যার উৎসব কিন্তু সবার
নন্দীগ্রামের আন্দোলনের সময় আপনারা একত্রিতভাবে কেউ আজানের ধ্বনি, কেউ শঙ্খধ্বনি, কেউ উলুধ্বনি দিয়েছেন। কেউ একে অপরের মধ্যে অশান্তি করেননি। ভুলতে পারি নিজের নাম ভুলব নাকো নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রাম মানে একটা সংগ্রাম
আমার ভুল আমি স্বীকার করছি, আমি বুঝতে পারিনি কেউ এরকম পিছন থেকে ছুরি মারতে পারে
আমার ভুল আছে। আমি জলঢোড়া ভেবে কেউটেকে আশ্রয় দিয়েছি। আমি ভালোবাসায় অন্ধ ছিলাম। এরা কেউ তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে ছিল না। তখন অখিল গিরি আমার সাথে লড়াই করেছিলেন
আমি অনশন শুরু করলাম কলকাতায়। তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে মেরে ফেলল। দিল্লি অবধি পৌঁছে গেল আন্দোলন। আমি তখন হাসপাতালে
আমি ১৪ ই মার্চ গুলির খবর শুনে এলাম। আমাকে আটকে দিল কোলাঘাটে। পেট্রল বোমা ছুড়ছিল। গোপাল গান্ধী আমাকে ফোন করে বললেন আপনি ফিরে যান। আমি পরদিন আনিসুরের বাইকে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তমলুক হাসপাতালে পৌঁছলাম। আনিসুরকেও ওই গদ্দার জেলে ভরে দিয়েছে। হাসপাতালে মৃত দেহ দেখে নন্দীগ্রামে গেলাম
নন্দীগ্রাম হাসপাতালে আমি পৌঁছতেই পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে আমার গাড়িতে। আমার সদ্য অপারেশন হয়েছে। মনে আছে আপনাদের পুলিশের ড্রেস পরে গুন্ডা এল। সেদিন এই বাপ বেটার অনুমতি ছাড়া পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না. আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি
আমি ভদ্রলোক বলে কিছু বলিনি, আমিও একটা গভর্নমেন্ট (সরকার) চালাই। আমিও খোঁজখবর পরে নিয়েছি
আমার বাড়িতে সেদিন কালি পুজো। এখান থেকে সবাই ফোন করে বলল। গুলি চলছে। আমি তমলুকে বসে পাহাড়া দিয়েছি। ১০-১৫ দিন ওরা কাউকে ঢুকতে দেয়নি নন্দীগ্রামে
চন্ডীপুরে আমি রাস্তায় বারো ঘন্টা আটকে ছিলাম। তারপর নন্দীগ্রাম ঢুকেছি। এখন ১০ জনের কোন খবর নেই। নদীতে মেরে ভাসিয়ে দিয়েছে
কিছুদিন আগে এসে আমি পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে দিয়েছি। সিবিআই আজ অবধি ওই কেসের কিচ্ছু করেনি। কেউ স্বস্তি পায়নি। কেন পাবে সেদিন যারা খুন করেছিল, আজ তারাই বিজেপির ওস্তাদ
ওরা আমার দলে আসতে চেয়েছিল। আমি দলে নিইনি। যারা আমার মা-বোনেদের শাঁখা সিঁদুর নিয়ে খেলেছে তাদের আমি ক্ষমা করিনি
আমি যেদিন টাকা দিতে এসেছিলাম সবার অনুমতি নিয়ে আমি এখানে দাঁড়িয়েছিলাম। নন্দীগ্রামের সংগ্রামকে সম্মান জানানোর জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি
আমি মুখ্যমন্ত্রী যেখানে খুশি দাঁড়াতে পারি। আমাকে যদি বহিরাগত বলে তাহলে ভূমিকন্যা কে?
ইউপি থেকে গুন্ডা নিয়ে এসেছে। পুলিশের পোশাক পরিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘোরাবে। পুলিশকে আপনারা ভয় পান?
আজ হিন্দু-মুসলমান করছে। কিছুদিন আগেই মুসলমানের টুপি পরে ঘুরে বেড়াত। এখন মুসলমান তোমার শত্রু? আপনারা একে অপরকে ছাড়া লড়াই করতে পারবেন?
রবীন্দ্রনাথকে কি হিন্দু কবি বলবেন? নজরুল কি শুধুই মুসলমানের কবি? গান্ধীজি কি শুধুই গুজরাটি? নেতাজি কি শুধুই বাঙালির? এনারা গোটা দেশের
ওরা বলছে ৩০ টার মধ্যে ২৬ টা আসন পাবে। ইভিএমে কি ওরা ঢুকে বসে আছে? কি করে জানল? আমি তো বলিনি
নন্দীগ্রামে আমরা স্কুল-কলেজ সব করে দিয়েছি
ওই গদ্দারকে সব বড় বড় মন্ত্রীত্ব দিয়েছি, কি দিইনি? আমি সীমারেখা পার করে কোন কথা বলবো না, আমার মুখ খুলিও না
তোমার সাথে আমার কোন লড়াই নেই, তুমি তোমার লড়াই করো
এবার ক্ষমতায় এলে আমি দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেব। মা বোনেদের হাতে মাসে মাসে ৫০০ টাকা করে দেব (এসসি, এসটিদের ১০০০)। কৃষকদের ৬,০০০ টাকা ১০,০০০ করে দেব। স্টুডেন্টদের ১০ লক্ষ টাকা করে দেব
ওরা টাকা দিলে টাকা নিয়ে নেবেন। তারপর ওদের একটাও ভোট দেবেন না। বলবেন ওটা আমাদের টাকা আমাদেরই দিয়ে দাও। সিপিএমের মতো ওরাও জমি কেড়ে নিচ্ছে। যেভাবে আপনারা সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন সেভাবেই এদেরকে বাংলা থেকে তাড়ান। বাংলাকে বাঁচান
২রা মে আমরা সবুজ আবিরে আজকের মতো দোল খেলব। আমি এক বছরের জন্যে নন্দীগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিয়েছি
আমি এখানে একটা কুড়ে ঘর বানাব আমার জন্যে। কলকাতার বাড়ির রেপ্লিকা। আমি হয়তো সারা জীবন বাঁচব না। কিন্তু এই বাড়িটা দেখতে মানুষ আসবে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ভুমিকন্যার বাড়ি