July 1, 2014
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে উপকৃত হবে সাত-আট লক্ষ পরিবার
এক বছরের মধ্যে `কন্যাশ্রী` প্রকল্পের যথেষ্ট সামাজিক প্রভাব পড়েছে। এ বার কন্যাশ্রীর ধাঁচেই তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য `শিক্ষাশ্রী` নামে একটি প্রকল্প চালু করছে সরকার।
সাঁওতাল বিদ্রোহ স্মরণে সোমবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা নতুন প্রকল্প চালু করছি। ৮০০ টাকা করে দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। যেমন কন্যাশ্রী করেছি, তেমনই তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য এই প্রকল্প।“
এক বছরের মধ্যেই কন্যাশ্রী প্রকল্পে রাজ্যে ১৫ লক্ষ ছাত্রী নাম নথিভুক্ত করেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষ ছাত্রী এই প্রকল্পের অনুদান পেতে শুরু করেছে। ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য সরকারের সরাসরি আর্থিক সাহায্যের প্রকল্প গ্রামবাংলায় যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। নিচু তলার ১০–১৫ লক্ষ ছাত্রীর কাছে পৌঁছনো মানে আসলে সাত–আট লক্ষ পরিবারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। শিক্ষাশ্রী প্রকল্পেও প্রায় ১৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে। অর্থাৎ সরাসরি উপকৃত হবে আরও সাত–আট লক্ষ পরিবার।
এত দিন তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের বইপত্র, পোশাক–সহ নানা খাতে সরকারি অনুদান দেওয়া হতো। সেই সব প্রকল্পের বদলে এ বার সার্বিক ভাবে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বছরে এক দফায় টাকা দেওয়া হবে। চলতি বছরে তফসিলি জাতির প্রায় ১২ লক্ষ পড়ুয়া এবং তফসিলি উপজাতির সাড়ে তিন লক্ষ পড়ুয়া এই প্রকল্পের আওতায় আসবে। এর জন্য চলতি আর্থিক বছরে খরচ হবে ১১০ কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পটি যৌথ ভাবে চালাবে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ এবং আদিবাসী উন্নয়ন দফতর।
কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১৩ থেকে ১৮ বছরের মেয়েদের (অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) বছরে ৫০০ টাকা দিচ্ছে সরকার। নাবালিকা বিয়ে ঠেকানোও এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। বার্ষিক আয় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকার কম, এমন পরিবারের মেয়েরাই এই সাহায্য পায়। ১৮ বছরের পরে কোনও মেয়ে বিয়ে না–করে পড়া চালিয়ে গেলে তাকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা দিচ্ছে রাজ্য। সরকারি অনুদান চলে যাচ্ছে ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ২০০ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৬২৩ কোটি।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রছাত্রীরা অনুদান পাবে। বার্ষিক আড়াই লক্ষ টাকার কম আয়, এমন পরিবারের পড়ুয়ারাই এই সুবিধে পাবে।তফসিলি উপজাতিদের ক্ষেত্রে প্রত্যেক পড়ুয়া পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বছরে ৮০০ টাকা অনুদান পাবে। তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অনুদানের পরিমাণ শ্রেণি অনুযায়ী আলাদা। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা বছরে যথাক্রমে ৫০০ এবং ৬৫০ টাকা পাবে। সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়ারা পাবে যথাক্রমে ৭০০ এবং ৮০০ টাকা। কন্যাশ্রীর মতো সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পড়ুয়ারাই এই প্রকল্পের আওতায় আসবে।